নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট | 46 বার পঠিত
পঞ্চম দিন গড়িয়ে ষষ্ট দিনে অমর একুশে বইমেলা। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গা জুড়ে চলছে এই বই উৎসব। এবার শুরু থেকেই পাঠক এবং দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বেশি হলেও এখনো জমে ওঠেনি বেচাকেনা। অবশ্য দর্শনার্থীদের আধিক্য থাকায় শিগগিরই বই বিক্রির খরা কাটার ব্যাপারে আশাবাদী প্রকাশক ও বিক্রেতারা।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে বইমেলা ঘুরে দেখা যায়, বিকেল ৩টায় মেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এর আগে থেকেই গেটে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। অবশ্য বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের টিএসসি সংলগ্ন গেট দিয়ে ৩টার প্রায় ১৫ মিনিট আগ থেকেই পাঠক-দর্শনার্থীরা ভেতরে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন। আয়তন ও পরিসর বাড়ানোর কারণে এবারের মেলায় প্রবেশ পথে নেই হকার কিংবা ভাসমান কোনো দোকান। ভেতরেও নিরাপত্তার কড়াকড়ির কারণে নেই হকারদের আনাগোনা।
এবার অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্য নিয়েই নির্ঝঞ্জাটভাবে ঘোরাফেরা করতে পারছেন সবাই। আর মেলায় ঘুরতে আসাদের মধ্যে অধিকাংশই তরুণ-তরুণী। এর মধ্যে আবার অধিকাংশ তরুণদের পাঞ্জাবি-পাজামা, আর তরুণীদের শাড়ি পরে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। বিভিন্ন প্রকাশনীর স্টল-প্যাভিলিয়নের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি-সেলফি তুলে দলবেঁধে ঘুরে বেড়াতেও দেখা যায়। আর বই কেনাকাটা করছেন এমন সংখ্যা একটু কমই। তবে, এখন ঘুরেফিরে দেখে মেলার শেষ সময়ে বই কিনবেন বলেও জানিয়েছেন অনেকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা মুন বলেন, বইমেলা কাছাকাছি হওয়ার কারণে প্রতিদিনই আসা হয়। এটি আমাদের কাছে উৎসবের মতো। বাসা ও ক্যাম্পাস দুটোই খুব কাছে। সেজন্য প্রতিদিনই এখানে ঘুরতে আসি। এত এত বইয়ের মেলায় ঘুরে বেড়াতে খুব ভালো লাগে। বন্ধুদের নিয়ে আজকেও এসেছি। ছবি তুলেছি। বেশ কিছু বই পছন্দ করে রেখেছি, সেগুলো কিনব।
রিনা আক্তার নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এ বছর আজকেই প্রথম মেলায় এসেছি। সময় তো আছেই। আপাতত ঘুরে বেড়াচ্ছি। কয়েকদিন এসে বেছে বেছে বইয়ের তালিকা করব। তারপর দাম দেখে একসাথে কেনাকাটা করব। তবে, এখন যদি একান্তই পছন্দ হয়ে যায়, তাহলে কিনে ফেলব।
বইমেলার বিক্রয় কর্মীরা বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মানুষের উপস্থিতি অনেক বেশি। শুরু থেকেই বইমেলা খুব জমজমাট। যার কারণে বিক্রির ব্যাপারে সবাই ব্যাপক আশাবাদী।
শব্দশৈলী প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী সাগর তালুকদার বলেন, বিক্রি খুব বেশি কিংবা কম এটি বলা যাবে না। সবাই এসে বই উল্টেপাল্টে দেখছে। পছন্দ হলে নিয়েও নিচ্ছে। এবার শুরু থেকেই বইমেলায় মানুষের পরিমাণ অনেক বেশি। আমরা আশা করি, দিন বাড়ার সাথে সাথে হয়ত মানুষের পরিমাণ আরও বাড়বে এবং বইয়ের বিক্রিও বাড়বে।
প্রথমা পাবলিকেশন্সের বিক্রয় কর্মী ওমর নাফিজ বলেন, প্রচলিত ও জনপ্রিয় বইগুলো এখন বিক্রি হচ্ছে। নতুন বইগুলো কম বিক্রি হচ্ছে। এখন অধিকাংশরাই বই খুলে পড়ে দেখছেন। আপাতত ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীর পরিমাণই একটু বেশি।
জানা গেছে, মেলায় বিক্রি বাড়াতে নির্ধারিত খুচরা দামের চেয়েও ছাড় দিয়ে বই বিক্রি করা হয়। বইমেলায় বাংলা একাডেমি ও মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করে। তবে বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করলে ডিসকাউন্ট কুপনের মাধ্যমেও ছাড়ের সুযোগ রয়েছে বলেও জানা গেছে।
এবারের মেলায় শারীরিকভাবে চলাচলে অক্ষম ব্যক্তিদের বইমেলায় স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে দেখার জন্য বিকাশ ও সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা রয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এবার বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায়। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি ইউনিট অর্থাৎ মোট ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৯৩৭টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলায় ৩৭টি (একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টি) প্যাভিলিয়ন রয়েছে।
বাংলা পোস্ট/আরএম/তাআসি
Posted ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
banglapostbd.news | Rubel Mia
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
৭৮/৩ কাকরাইল, ভিআইপি রোড, ঢাকা-১০০০।