নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট | 23 বার পঠিত
বাংলার সাহিত্য অঙ্গনে এক চিরস্মরণীয় নাম হুমায়ুন আহমেদ। তার মৃত্যুর প্রায় এক যুগ পেরিয়ে গেলেও তাকে ভোলেনি বাংলার সাহিত্যপ্রেমীরা। অনবদ্য সাহিত্যকর্ম দিয়ে অনুরাগীদের মনে এখনো জায়গা করে আছেন তিনি। আর সেটার প্রমাণ মেলে এবারের বই মেলায়ও। তার বই ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায়। মেলায় বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের তার বইয়ের প্রতি বেশ আগ্রহী দেখা যায়। মৃত্যুর পরও আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন দেশসেরা এ লেখক। মৃত্যুর পরও যেন অমর তিনি।
সরজমিনে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে গিয়ে দেখা যায়, হুমায়ুন আহমেদের প্রকাশিত বইয়ের স্টলগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড়। দেখে মনে হচ্ছিল হুমায়ুন আহমেদ স্টলে দাঁড়িয়ে তার ভক্তদের অটোগ্রাফ দিচ্ছেন আর ক্রেতারা তা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে কিনছেন।
এবারের বইমেলায় অন্যপ্রকাশ, অনুপম, অনন্যা, অন্বেষা ও কাকলী এই পাঁচটি প্যাভিলিয়নে পাওয়া যাচ্ছে হুমায়ুন আহমেদের বইগুলো। এগুলোর সব প্যাভিলিয়নেই তরুণ-তরুণীদের কম-বেশি ভিড় দেখা যায়। বিভিন্ন বয়সী হুমায়ুনপ্রেমীরা বই দেখছেন ও পছন্দের বই সংগ্রহ করছেন। অন্যান্য লেখকের চেয়ে হুমায়ুন আহমেদের বইয়ের বিক্রি বেশি বলেও জানান স্টলগুলোর বিক্রয়কর্মীরা।
বইমেলা ঘুরতেই অনন্যা প্রকাশনীর সামনে একটা ছোট জটলা দেখা যায়। তারা সবাই রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে বইমেলা ঘুরতে এসেছেন বলে জানান। কি বই কিনতে এসেছেন জানতে চাইলে বলেন, তারা সবাই হুমায়ুন আহমেদের ভক্ত। তারা বিশেষত হুমায়ুন আহমেদের বই কিনতেই বইমেলায় এসেছেন।
এই দলেই থাকা সুমনা আক্তার নামে এক পাঠিকা বলেন, আমি অষ্টম শ্রেণিতে থাকতেই হিমু পড়ার মাধ্যমে হুমায়ুন আহমেদের ভক্ত হয়েছি। পরে মিসির আলি, অপেক্ষা উপন্যাস, মানুষ, কে কথা কয়সহ অন্যান্য বইগুলোও পড়েছি। হুমায়ুন স্যারের বই মানেই আমার কাছে ভিন্ন কিছু।
বইমেলায় হুমায়ুন আহমেদ ভক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাসান ফারুক বলেন, এমন কতদিন আর কত রাত পার করেছি হুমায়ুন স্যারের বই পড়ে তার হিসাব নেই। একটা বই শুরু করলে শেষ না করে উঠতে পারতাম না। স্যার মৃত্যুবরণ করেছেন কিন্তু তার বইগুলো তাকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে। নতুন অনেক লেখক আসবেন কিন্তু হুমায়ুন স্যারের মতো কেউ আসবেন না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের নারী শিক্ষার্থী ফারহানা জানান, তিনি ছোট থেকেই হুমায়ুন আহমেদের ভক্ত ও নিয়মিত তার বই পড়তেন। হুমায়ুন আহমেদের সব বই পিডিএফ পড়লেও বইমেলা থেকে বই কিনে পড়া হয়নি বলেই এবারের মেলায় তিনি এসেছেন।
অনন্যা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী রানা বলেন, আমাদের স্টলে সবসময়ই বিক্রি ভালো থাকে। আজকে ছুটির দিন হওয়ায় বিক্রি বেড়েছে অনেক। হুমায়ুন আহমেদ, আনিসুল হকের বইগুলো অনেক বেশি পাঠকপ্রিয়। ‘হিমু সমগ্র, মিসির আলি’ বরাবরই মানুষের কাছে জনপ্রিয় বলে বিক্রি ভালো।
কাকলী প্রকাশনীর প্যাভিলিয়নে কর্মরত মেহেদী হাসান আসিফ বলেন, ইতোমধ্যেই বইমেলা বেশ জমেছে। গত বছরের তুলনায় বিক্রিও বেশ ভালোই। হুমায়ুন আহমেদের বইগুলো তরুণ-তরুণীরা বেশি কিনছেন। হিমু, মিসির আলি সমগ্র, গল্পসমগ্র বইগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে।
অন্যপ্রকাশ প্যাভিলিয়নের একজন বিক্রয়কর্মী বলেন, হুমায়ুন আহমেদ বরাবর পাঠকপ্রিয় লেখক। আমাদের স্টল থেকে স্যারের অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে। তার লেখা বইগুলোর চাহিদা সবসময়ই বেশি। এবারও তার বই বেশি বিক্রি হচ্ছে।
কাকলী প্রকাশনীর প্রকাশক ও স্বত্বাধিকারী নাসির আহমেদ সেলিমকে মেলায় বিক্রির সার্বিক বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমাদের প্যাভিলিয়নে হুমায়ুন আহমেদের বইয়ের বিক্রি প্রতি বছরই বেশি থাকে। এবারও তার তারতম্য হচ্ছে না। পাঠকরা আসছেন, তার বইগুলো দেখছেন ও কিনছেন। সব বয়সের মানুষ বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা হুমায়ুন আহমেদের বইয়ে আসক্ত বেশি।
তিনি বলেন, একসময় হুমায়ুন আহমেদ প্যাভিলিয়নে আসতেন। পাঠকরা তার অটোগ্রাফ সম্বলিত বই কিনতেন। কিন্তু এখন তিনি নেই, তবুও মনে হয় তিনি এসেছেন, পাঠক আগ্রহ নিয়ে তার হাত থেকে বই সংগ্রহ করছেন।
উল্লেখ্য, বইমেলার ১২তম দিনে প্রকাশিত নতুন বইয়ের সংখ্যা ১১২টি। এ নিয়ে অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ এ প্রকাশিত মোট নতুন বইয়ের সংখ্যা ১০২৭ টি। আজ (সোমবার) বিকেল ৩টায় মেলা শুরু হয়ে ৯টায় শেষ হয়।
বাংলা পোস্ট/আরএম/তাআসি
Posted ২:৩৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
banglapostbd.news | Rubel Mia
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
৭৮/৩ কাকরাইল, ভিআইপি রোড, ঢাকা-১০০০।